মিরসরাই প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের মিরসরাই পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ভবনে জরাজীর্ণ ভবন চলছে শ্রেণী কার্যক্রম। সম্প্রতি ১৯ বছরের পরিত্যক্ত ওই দ্বিতল ভবনের ছাদ ধসে পড়ছে। এতে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী। ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীনতম মিরসরাই পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়টি উপজেলা সদরে অবস্থিত। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে মিরসরাই পাইলট গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ওই স্কুলের পশ্চিম ভবনের ধসে পড়া ছাদের দৃশ্য। এর আগেও ওই ভবনের ছাদ ধসে পড়ে শিক্ষার্থী আহতও হয়।
তারপরও বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষের সংকটের কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ ওই ভবনে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করে আসছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন প্রধান শিক্ষক মহি উদ্দিন। শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারাও আতঙ্ক অবস্থায় রয়েছেন। শিক্ষাথীদের সব সময় আতংকের মধ্যে ক্লাস করতে হয়। এছাড়াও নিচতলার দুটি কক্ষে চলছে পার্শ্ববর্তী মিরসরাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায়ের শ্রেণী কার্যক্রম। অপরদিকে, পরিত্যক্ত ভবনের সামনে আরেকটি ভবন নির্মাণ করলেও পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষ না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবনটিতে এখনো দু’টি ক্লাস অব্যাহত রেখেছেন। জানা গেছে, ১৯৬২ সালে এ বিদ্যালয়টি এলাকার শিক্ষানুরাগীদের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর নির্মাণ করা হয় পশ্চিম পাশের একাডেমিক ভবনটি। শ্রেণীকার্যক্রমের অনুপযোগী হয়ে পড়লে প্রায় ১৯ বছর আগে এ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরিত্যক্ত ভবনে শ্রেণীকার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তবে পার্শ¦বর্তী ৪৪ শতক জমিতে সরকারিভাবে ঘোষণাকৃত মডেল উচ্চ বিদ্যালয় নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও তা হয়নি।বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হোসাইন সবুজ বলেন, বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্র“তি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। ফলে ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়টি আজো অবহেলার শিকর। তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে চাইবেন না কেউ। এ যেন প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতো অবস্থা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহি উদ্দিন জানান, বিদ্যালয় ভবনটি মেরামতের জন্য পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি পৌর মেয়র এম শাহাজাহানের সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছি। জরাজীর্ণ ভবনটি নিয়ে আমরা সব আশঙ্কার ও আতঙ্কের মধ্যে ছিলাম। কখন ভবনটির ছাদ ধসে পড়ে। গত সপ্তাহে ভেঙ্গে পড়েছে জরাজীর্ণ ভবন। এসময় অল্পের জন্য রক্ষা পায় অনেকগুলো প্রাণ। জরাজীর্ণ ভবনে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মিরসরাই পৌর মেয়র এম শাহাজাহান বলেন, একাডেমিক ভবনের সংকটে ১৯ বছরের পরিত্যক্ত ভবনে শ্রেণীকার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। তবে পার্শ¦বর্তী ৪৪ শতক জমিতে সরকারিভাবে ঘোষণাকৃত মডেল উচ্চ বিদ্যালয় নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখন তা আলোর মুখ দেখেনি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কয়েক দফা পরিদর্শন করলেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। তবে মডেল ভবনের কাজ যাতে দ্রুত শুরু হয় সেজন্য সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আবেদন করা হয়েছে।মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে মুলতঃ আশেপাশে এলাকার সন্তানেরা লেখাপড়া করে। ক্লাস চলাকালে ছাদ ধসে পড়লে অনেক শিক্ষার্থীর প্রাণহানি ঘটবে। তাই শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।