কক্সবাজার: কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ বিহার ও বসতিতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় উচ্চ আদালতের নিদের্শে গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি রামুতে এসে পৌঁছেছেন। তদন্ত কমিটি প্রধান হলেন- চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. আবদুল কুদ্দুস মিয়া। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ বিচারক (জেলা জজ) শরীফ মোস্তফা করিম এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কারা অধিদপ্তর-২ এর উপ-সচিব মো. জহুরুল ইসলাম রোহেল। সকালে রামুতে পৌঁছে তদন্ত কমিটির প্রতিনিধিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবী চন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
কমিটির প্রধান চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. আবদুল কুদ্দুস মিয়া বাংলানিউজককে জানিয়েছেন, ২৫ মার্চ পর্যন্ত রামুতে অবস্থান করে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন তারা। এজন্য প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রামু উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষ ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রত্যক্ষদর্শী, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে আলাপ করবেন বলে তিনি জানান। এ সময় তিনি ২৯ সেপ্টেম্বর সংগঠিত ঘটনা সর্ম্পকে যারা অবগত আছেন তাদের তদন্ত কমিটির সম্মুখে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য অনুরোধ জানান। তিনি আরো জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তদন্তের সময় বৃদ্ধি করা হবে। প্রসঙ্গত, ফেসবুকে একটি ছবি ট্যাগ করায় পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগ এনে ২৯ সেপ্টেম্বর রামু উপজেলার বৌদ্ধ বিহার ও বসতিতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ হামলায় ১২টি বৌদ্ধ বিহার ও প্রায় ৩০টি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আরও ছয়টি বৌদ্ধ বিহার ও শতাধিক বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। ২৯ সেপ্টেম্বর রামুর বৌদ্ধ বিহার ও বসতিতে হামলার ঘটনায় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে গত বছরের ৩ অক্টোবর সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের (নং- ১২৭৩৮/২০১২) করেন রামুর বাসিন্দা সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তিনি সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে তদন্তের জন্য ১৩ ডিসেম্বর একটি দরখাস্ত দাখিল করেন। এর প্রেক্ষিতে ১৩ ডিসেম্বর প্রদত্ত আদেশের মর্মানুযায়ী তদন্তকার্য সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রলালয়, আইন ও বিচার বিভাগ, বিচার শাখা-৫ এর ১১/০৩/২০১৩ ইং তারিখের বিচার-৫/৩এম-২৫/২০০২(অংশ-১)-২০০ নং স্মারকে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।