ডেস্ক রিপোর্ট : কক্সবাজারের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাবারুনি
গঙ্গা স্নান উৎসবে লাখো পূণ্যার্থীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল। সোমবার ভোর
থেকে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী নর-নারীরা সমবেত হয়ে
সাগর স্নানে মেতে উঠে। ভারতের বৃহৎ গঙ্গা স্নানের আদলে দেশের কক্সবাজার
সৈকতে এ উৎসবে বিভিন্ন জেলার পূজারীরা অংশ গ্রহণ করেন। হরতালের কারনে
অবশ্যই আগের দিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পুজারীরা কক্সবাজার সমুদ্র
সৈকতের ডায়বেটিক পয়েন্ট অবস্থান নেয়।
পুনার্থীদের পদভারে সৈকতের পাঁচ
কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বসে মিলন মেলা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, বছরের
পাপ ধুয়ে পবিত্র হওয়া এবং পরলোকগত চৌদ্দ পুরুষের আত্মার সদগতি কামনা করে
মহাবারুনি স্নান করে। পাশাপাশি পরিবারের শান্তি-মঙ্গল কামনার জন্য প্রতি
বছর এইদিনে বঙ্গোপসাগরের পানিতে বারুনি স্নানের আয়োজন করা হয়। যুগ যুগ ধরে এ
স্নান চলে আসলেও অনেকটা প্রচারণা বিহীনভাবে এ উৎসব চলে। তবে গত কয়েক বছর
ধরে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। সকাল থেকে সাগর
পাড়ের বেলাভূমিতে বিভিন্ন বয়সী নর-নারী, শিশু, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সনাতন
ধর্মাবলম্বীরা দলে দলে উৎসবে যোগ দেয়। সৈকতে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
সনাতনীদের
পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও উৎসব দেখতে ভিড় জমায়। অনেকে সাগর জলে
স্নানে নেমে পড়ে। সৈকত ঘুরে দেখা গেছে, ঋষি-মনীষি, পুরোহীত-ব্রাহ্মণেরা
সৈকত জুড়ে ধ্যান-সাধনায় মেতে রয়েছে। বারুনি স্নানের লক্ষ্যে সৈকতের বিশাল
এলাকা জুড়ে হরেক রকমের পণ্যের বেচা-কেনার স্টল বসেছিল। সারাদেশের পাশপাশি
ভারতের অনেক কৌতুহলী সনাতন ধর্মাবলম্বীও উৎসবে যোগ দেয়। এদিকে দ্বিতীয় মতো
এবারও বণার্ঢ্য মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল অদ্বৈত-অচ্যুত মিশন। এ
মিশনের উদ্যোগে ৮ এপ্রিল ভোর থেকে শুরু হওয়া মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানমালায়
পৌরহিত্য করেন বাঁশখালী ঋষিধামের অধিপতি ও চট্টগ্রাম নন্দনকানন তুলসীধামের
মোহন্ত মহারাজ শ্রীমৎ নারায়ণ পুরী মহারাজ। ভাগবতীয় সভার উদ্বোধক করেন জেলা
প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার একটি ধর্ম
নিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী সরকার। এ সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অটুট বন্ধন
বাংলার মাটিতে বজায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন
কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র রাজ বিহারী দাশ, জেলা পুজা কমিটির
সভাপতি এডভোকেট রনজিত দাশ, সাধারন সম্পাদক বাবুল শর্মা, যোগেশ্বর চৌধুরী,
জনতা ব্যাংকের উপ-মহা ব্যবস্থাপক অখিল কুমার সরকার, অধ্যাপক অজিত দাশ, উদয়
শংকর পাল মিঠু, ভোর থেকে বিকাল পর্যন্ত গীতাপাঠ ও ভজন কীর্তন করে দর্শক
মাতিয়ে রাখেন চট্টগ্রামের খ্যাতনামা গীতাপাঠক প্রদর্শন দেবনাথ।