Thursday, 28 February 2013

সারা দেশে জামায়াত শিবিরের সহিংসতা : পুলিশের সাথে সংঘর্ষ

হরতালে মিরসরাইয়ে জামায়াত-শিবিরের রাজপথ অবরোধ : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর বিরুদ্ধে আজ রায়ের প্রতিবাদে দেশব্যাপী জামায়াতের হরতাল চলছে। হরতালে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে শত শত জামায়াত-শিবিরকর্মী জড়ো হতে থাকে। জামায়াত-শিবির কর্মীরা মহাসড়কের চিনকির আস্তানা এলাকা থেকে শুরু করে বারইয়ারহাট পৌর সদর পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করে। হরতাল সমর্থকরা ইটের টুকরা ফেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয়। এসময় থানার ওসি (তদন্ত) ইমতিয়াজ ভূঁইয়া ও উপ-পরিদর্শক আবুল খায়েরের উপস্থিতিতে উপজেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি নুরুল কবিরের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন বারইয়ারহাট পৌরজামায়াতের কশিনার নুরুল হুদা হামিদী, ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি রেদোয়ানুল হক প্রমুখ। এসময় সমাবেশে বক্তরা বলেন, মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে ফাঁসির রায় ঘোষণা করা হলে মিরসরাই সহ সারাদেশে আগুন জ্বলবে। রাজপথ অবরোধের মাধ্যমে জালিম সরকারের পতন ঘটানো হবে।মিরসরাই থানার ওসি ইফতেখার হাসান জানান, নাশকতা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সকালে মহাসড়েকর বারইয়ারহাট হরতালকারীরা অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশ দেখে পালিয়ে যায়। এছাড়া হরতালে উল্লেখ্যযোগ্য তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি।

কসবায় শিবিরের হামলায় ৪ পুলিশ সদস্য আহত : সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় জামায়াত-শিবিরের হামলায় ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।  জানা গেছে, বিকেলে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার প্রতিবাদে একটি মিছিল বের করে।এ সময় মিছিলে বাধা দিলে পুলিশের ওপর হামলা চালায় মিছিলকারীরা। এতে চার পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ও শটগানের গুলি ছুড়লে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভোলায় ২০টি গাড়ি ভাঙচুর, মহাসড়ক অবরোধ : বৃহস্পতিবার যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে অশান্ত হয়ে উঠেছে ভোলা। রায় ঘোষণার পর ভোলা-লক্ষীপুর-বরিশাল মহাসড়কের ভোলা অংশ অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এসময় বিক্ষুদ্ধ শিবির কর্মীরা ইলিশা ফেরিঘাট এলাকায় ৫টি দূরপাল্লার বাস ও ১৪টি ট্রাক ভাঙচুর করে। এতে ২৫ জন সাধারণ যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিক আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে, রায় ঘোষণার পরপরই আনন্দ মিছিল করেছে জেলা ছাত্রলীগ। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ফজলুল কাদের মজনু মোল্লার নেতৃত্বে মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।অপরদিকে, নাশকতার আশঙ্কায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। শহরের সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বলে স্থানীয়রা জানান। ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির জানান, জেলায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ৫ শতাধিক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

মাদারীপুরে পুলিশ সুপার অপসারণ : মাদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) নজরুল হোসেনকে বুধবার মধ্যরাতে অপসারণ করা হয়েছে।মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাসিরুল ইসলাম  ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বৃহস্পতিবারের মধ্যে পুলিশ সুপারকে পুলিশের হেড কোয়ার্টারে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে’।দুদিন পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদারীপুর আসবে এসময় পুলিশ সুপারকে হেডকোয়ার্টারে ডেকে পাঠানোর কারণ জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘তাকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে হেডকোয়ার্টারে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে এতোটুকুই জানি এর বেশি বলা যাবে না।’ মাদারীপুরের পুলিশ সুপার হিসেবে কে দায়িত্ব নিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন ও কেউ আসেনি কিংবা কাউকে  দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তবে আমি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবেই প্রধানমন্ত্রীর আগমনের  যাবতীয় ব্যবস্থা করছি।’ এ বিষয়ে অসমর্থিত একটি সূত্র জানায়,  পুলিশ সুপার নজরুল হোসেনের সঙ্গে জামায়াতের সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। তিনি চট্টগাম বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার সময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক নূর-উর-রহমান বলেন, ওনাকে হেডকোয়ার্টারে ডেকে নেওয়া হয়েছে। আমি এখনও আদেশের কপি দেখিনি। এ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ মো. জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।